আবারও আটকে গেলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অর্থছাড়
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির শেয়ার চুক্তি অনুযায়ী চায়না কোম্পানির নিকট হস্তান্তর স্থিতাবস্থাতেই থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) শুনানি শেষে এই আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
আপিল বিভাগ বলেন, সিঙ্গাপুরের আরবিট্রিশন আদালতের অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠকে বিষয়টির সমাধান হবে। সেখানে সমাধান না হলে তিন মাস পর তা আদালতকে জানাতেও বলা হয়।
এই আদশের ফলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অর্থছাড় ইস্যুটি ফের ঝুলে রইলো। ফলে এক্সপ্রেসওয়ের কাজও বন্ধ থাকবে।
এদিন, ইতালিয়ান-থাই কোম্পানির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। চাইনিজ কোম্পানির পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।
শুনানির একপর্যায়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, আদালত চায় প্রজেক্টটা সুন্দরভাবে চলুক। সবাই কোম্পানির পক্ষে দাঁড়িয়েছে, দেশের পক্ষে কেউ নেই।
চাইনিজ কোম্পানির আইনজীবী ব্যারিস্টার মেহেদী হাছান চৌধুরী বলেন, আদালত আরবিট্রিশন আদালতের অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠক পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিয়েছে। সুতরাং প্রথম বৈঠকের পর স্থগিতাদেশ থাকবে না। তবে সহসাই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।
এদিকে ইতাল-থাই কোম্পানির আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, আপিল বিভাগ হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বাতিল করে, এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
গত ১৬ মে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে শেয়ার হস্তান্তরের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। তখন আপিল বিভাগ বলেন, আর কয়দিন কাজ বন্ধ থাকলে সমস্যা নেই। দেনা-পাওনা নিয়ে থাই ও চায়না কোম্পানির বিরোধ সিঙ্গাপুরের আরবিট্রেশন আদালত নিষ্পত্তি করবেন। এরপর দেশের আদালতে শুনানি করে সমাধান হবে।
এর আগে, ১১ মে হাইকোর্ট শেয়ার হস্তান্তরের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ তুলে নেন। বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধরীর একক কোম্পানি বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন। পরদিন সেই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে চেম্বার আদালতের দ্বারস্থ হলে, কোনো আদেশ না দিয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান-থাই, চীনের শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড মিলে করছিলো এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ। এই কাজে তিন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার যথাক্রমে ৫১, ৩৪ ও ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ হলো এক্সপ্রেসওয়ের নির্বাহী প্রতিষ্ঠান।
প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয়ের ৭৩ শতাংশের জোগান দেবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। আর ২৭ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ সরকার।